পাবনার সুজানগরে বিএনপির সংঘর্ষে ১৫ জন আহত, ১০ নেতা বহিষ্কার


পাবনার সুজানগরে মোবাইল ফোনে কথা বলাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। ৯ জুলাই ২০২৫, বুধবার ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফ গুরুতর আহত হন। ১০ জুলাই, বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১০ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়।

শুক্রবার, ১১ জুলাই, সুজানগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৌফিক হাসান কালবেলাকে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বহিষ্কৃত নেতারা হলেন—শেখ আব্দুর রউফ (৫২), ছাত্রদল নেতা শেখ কাউছার (২৮), যুবদল নেতা মনজেদ শেখ (৪৫), সুজানগর পৌর বিএনপির ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিবর খাঁ (৬০), সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য কামাল শেখ (৪৬), পৌর যুবদল সদস্য মানিক খাঁ (৩৮), সুজানগর এনএ কলেজ শাখার সভাপতি শাকিল খাঁ (২৫), সুজানগর পৌর ৬নং ওয়ার্ডের সিনিয়র সহসভাপতি রুহুল খাঁ (৪০), বিএনপি কর্মী লেবু খাঁ (৬০) এবং যুবদল কর্মী হালিম শেখ (৪০)।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সুজানগরে রক্তাক্ত সংঘাতে জড়িত থাকার অভিযোগে এসব নেতাকর্মীকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া, মোলায়েম খাঁ ও সুরুজসহ অন্যরা যারা এই ঘটনায় জড়িত ছিলেন, তারা বিএনপি বা এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সদস্য নন। তাদের সঙ্গে বিএনপি বা এর অঙ্গ সংগঠনের কোনো সম্পর্ক নেই। দলের কেউ এই দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখলে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তৌফিক হাসান বলেন, বহিষ্কারের বিষয়টি কেন্দ্র থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। গুরুতর আহত সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফের বহিষ্কার দুঃখজনক। সুজানগর থানার ওসি মজিবর রহমান কালবেলাকে জানান, এখনো কোনো মামলা হয়নি এবং কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।
ঘটনার সূত্রপাত গত মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, যখন সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মজিবর খাঁয়ের অনুসারী আশিকের ফোন কেড়ে ভেঙে ফেলেন আব্দুর রউফের ভাতিজা ছাত্রদল নেতা কাউছার ও তার অনুসারীরা। ঘটনাটি প্রাথমিকভাবে মীমাংসা হলেও, বুধবার দুপুরে কাউছার আশিককে নন্দিতা সিনেমা হলের সামনে ডাকেন। আশিক তার চাচাতো ভাই ছাত্রদল নেতা সবুজকে সঙ্গে নিয়ে যান। সেখানে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে কাউছার ও আশিকের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। সবুজ বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর ও ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে মজিবর খাঁ, লেবু খাঁ, মানিক, সুরুজসহ দলবদ্ধভাবে কাউছারদের ওপর হামলা চালান। আব্দুর রউফ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করতে গেলে তাকেও কুপিয়ে ও মারধর করে আহত করা হয়। এ সময় গোলাগুলিও হয়। গুরুতর আহত রউফকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।