প্রধান বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত দুই বিষয়ে একমত হয়েছে দলগুলো : আলী রীয়াজ

প্রধান বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত দুই বিষয়ে একমত হয়েছে দলগুলো

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত দুটি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের ১১তম দিনের আলোচনা সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন। অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আজকের আলোচনায় প্রধান বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত দুটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। এগুলো হলো— সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের বিদ্যমান ব্যবস্থা পরিবর্তন এবং রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করবেন। বিদ্যমান সংবিধানে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে, জ্যেষ্ঠতম একজনকে নিয়োগ করা হবে, নাকি জ্যেষ্ঠ দুইজনের মধ্যে একজনকে নিয়োগ করা হবে, এই বিষয়ে দুটি মত পাওয়া গেছে। কমিশন এ বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে আরেকটু বিবেচনা করে সুনির্দিষ্ট মতামত দেওয়ার জন্য বলেছে। আশা করি, পরবর্তী আলোচনায় এই বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছে যাবো। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক প্রধান নিয়োগের ক্ষেত্রে আইনসভার মধ্য থেকে প্রস্তাব বা নিয়োগের ব্যবস্থা করার প্রস্তাব জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে দেওয়া হয়েছে। আজ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে এ বিষয়ে মতামত পাওয়া গিয়েছে। এই মতামতের ভিত্তিতে আরও সুনির্দিষ্ট প্রসットাব টেবিলে রয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য আছে। প্রত্যেক দল চায় তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ত্রুটিহীন হোক, যাতে দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের প্রতিফলন ঘটে এবং ভবিষ্যতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিতর্কের মধ্যে না পড়ে। জরুরি অবস্থা ঘোষণা সংক্রান্ত আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো দুটি বিষয়ে একমত হয়েছে। সংবিধানের ১৪১এ অনুচ্ছেদের জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিধান সংশোধন করতে হবে, যাতে এটি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না হয়। এই বিষয়গুলো আরও সুস্পষ্ট করা প্রয়োজন বলে রাজনৈতিক দলগুলো মনে করে। এজন্য আরও আলোচনা চলছে। ‘অভ্যন্তরীণ গোলযোগ’ শব্দটি সংবিধান থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে দলগুলো একমত। জরুরি অবস্থা ঘোষণার ক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা এবং প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিস্বাক্ষরে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব এসেছে। কিছু দল প্রস্তাব করেছে সংসদের কোনো কমিটির মাধ্যমে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হোক। কমিশন মন্ত্রিসভার অনুমতি নিয়ে বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে। এই আলোচনা চলছে, এবং আগামী সপ্তাহে জরুরি অবস্থা বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
আলী রীয়াজ বলেন, ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে। আমরা আশাবাদী, এই মাসের মধ্যে একটি সনদ তৈরি করতে পারব। প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হচ্ছে। এগুলো তাড়াহুড়োর বিষয় নয়, নির্দিষ্ট শব্দ ও বাক্য বিবেচনা করে এগোচ্ছি। রাজনৈতিক দলগুলো আন্তরিকতা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে আলোচনা করে এগিয়ে যাচ্ছে