জি এম কাদেরের অব্যাহতির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করলেন আনিসুল, রুহুল ও মুজিবুল


রাজধানীর গুলশানে মঙ্গলবার (৮ জুলাই ২০২৫) এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির (জাপা) তিন জ্যেষ্ঠ নেতা—সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার এবং মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু—দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের দেওয়া অব্যাহতির সিদ্ধান্তকে সম্পূর্ণ বেআইনি ও স্বৈরাচারী বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা জানিয়েছেন, তারা এই সিদ্ধান্ত মানেন না এবং দলের আসন্ন কাউন্সিলে অংশ নেবেন।

সোমবার (৭ জুলাই ২০২৫) জি এম কাদের দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তিন নেতাকে দলীয় সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘোষণা দেন। এছাড়া মুজিবুল হক চুন্নুকে সরিয়ে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে নতুন মহাসচিব নিয়োগ দেওয়া হয়। গত এক সপ্তাহে মোট ১১ জন নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, যা জাপার মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই বিষয়ে বুধবার জি এম কাদের গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন।

সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, জি এম কাদের যে সভা ডেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন, সেই সভা ডাকার ক্ষমতা তার নেই। দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রেসিডিয়ামের সভা ডাকতে পারেন শুধু মহাসচিব। তাই এই সিদ্ধান্ত তারা মানেন না এবং তারা তাদের পদে বহাল আছেন। তিনি আরও বলেন, জাপার গঠনতন্ত্রের যে ধারার অধীনে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তা বাতিল করা উচিত। এই ধারা চেয়ারম্যানকে এককভাবে নিয়োগ বা বহিষ্কারের ক্ষমতা দেয়, যা গণতান্ত্রিক নয়। আনিসুল অভিযোগ করেন, জি এম কাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদের অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে জোর করে কো-চেয়ারম্যানের পদ নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “জি এম কাদেরের প্রতিটি সিদ্ধান্তে স্বৈরাচারী মনোভাব প্রকাশ পায়। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে জাপার সঙ্গে আছেন এবং তিনি যখন সংসদ সদস্য ছিলেন, তখন জি এম কাদের একটি বেসরকারি কোম্পানির ম্যানেজার ছিলেন। তিনি জানান, জি এম কাদের দলের ২৮ জনকে পদোন্নতি দিয়েছেন, কিন্তু মহাসচিব হিসেবে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। তিনি বলেন, “আমরা জাতীয় পার্টি ছাড়ব না, দল ভাঙতেও দেব না। আমরা কাউন্সিলে যাব, এবং সেখানে আমাদের কথা না মানলে আর কথা থাকবে না।”
রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, তিনি ১৭ বছর জাপার মহাসচিব ছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, একটি শক্তিশালী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রে তাদের দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “জি এম কাদের দলের ক্ষতি করছেন। তিনি যা করছেন, তা কোনো সুস্থ রাজনীতিবিদ করতে পারেন না।”

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাইদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, মোস্তফা আল মাহমুদ, নাজমা আকতার, জসিমউদ্দিন ভূঁইয়া, আরিফুর রহমান খান, জহিরুল ইসলাম জহির, সোলায়মান আলম শেঠসহ অন্যান্য নেতারা।[